চৌদ্দগ্রাম প্রতিনিধি
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম এইচ জে সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রূপম সেন গুপ্ত ও পরিচালনা কমিটির ভর্তি বাণিজ্য এবং স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে বিদ্যালয়ের সন্নিকটে মানববন্ধন করেছে বিক্ষুদ্ধ অভিভাবকরা। মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন অভিভাবক পৌরসভার গোমারবাড়ির আবদুল্লাহ আল মামুন, শ্রীপুরের কামাল উদ্দিন, রামরায়গ্রামের সাহাব উদ্দিন, গোমারবাড়ির এয়াকুব নবী, কিংশ্রীপুরের কামাল উদ্দিন ও নাসির উদ্দিনসহ পৌরসভা এবং আশপাশের বিভিন্ন ইউনিয়নের বিপুল সংখ্যক অভিভাবক। মানববন্ধনে অভিভাবকরা বলেন, সরকারের নিয়ম অনুযায়ী ষষ্ঠ শ্রেণীতে অনলাইনে আবেদন করার নিয়ম থাকলেও বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রূপম সেনগুপ্ত সরকারের নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে ৪ ধরনের ফরম বিক্রি করেন। দুই ধরনের ফরমে ক্রমিক নং কম্পিউটারাইজড আর দুই ধরনের ফরমের ক্রমিক নং হাতে লেখা ছিল।
তারা অভিযোগ করে বলেন, অনলাইনে ফরম বিক্রি না করে একজন শিক্ষার্থীর নামে হাতের লিখা একাধিক ফরম বিক্রি করা হয়েছে। এতে একজন শিক্ষার্থী লটারীতে একাধিকবার চান্স পেয়ে যায়। একাধিকবার চান্স পাওয়া শিক্ষার্থীর একটি রোল রেখে বাকিগুলোতে অভিভাবকদের থেকে মোটা অংকের বিনিময়ে পছন্দের শিক্ষার্থীদের ভর্তি করা হয়েছে। হাতের লিখা ফরমের কারণে এ অনিয়ম ও ভর্তি বাণিজ্যেও সুযোগ পেয়েছেন প্রধানশিক্ষকসহ সংশ্লিষ্টরা। অনলাইনে ভর্তি ফরম পূরণ করা হলে এ ধরনের অনিয়ম করার সুযোগ পেত না বলে অভিভাবকরা জানান।
এছাড়া সরকারি বিধি মোতাবেক দুই শাখায় ১২০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করার নিয়ম থাকলেও বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ১৪০ জন শিক্ষার্থীর নাম হাজিরা খাতায় রয়েছে বলে অভিভাবক মামুন জানান।
মোহাম্মদ মোশারফ নামের এক অভিভাবক বলেন, কুমিল্লা জিলা স্কুল ও ফয়েজুন্নেছা স্কুলসহ দেশের সকল সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দুই শিফটে ক্লাস হয়। ব্যতিক্রম শুধু চৌদ্দগ্রাম এইচ জে সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে। সরকারি হওয়ার পরে শিক্ষার্থী ভর্তি সংরক্ষিত বা সীমিত করার কারণে চৌদ্দগ্রাম পৌর এলাকার ৩ ভাগের ২ ভাগ শিক্ষার্থী এ বিদ্যালয়টিতে ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে না। উপজেলা সদরের পৌর এলাকায় বিকল্প কোন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ও নেই। ফলে আমাদের সন্তানরা অনেক দূরে গিয়ে ভর্তি হতে হচ্ছে। আবার অনেক শিক্ষার্থী ভর্তি হতে না করে এখানেই লেখাপড়ার ইতি টানছে।
ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ ও নতুন করে অনলাইনে ফরম বিক্রি করে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষের কাছে জোর দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগী অভিভাবকগণ।
এরআগে এ বিষয়ে কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের কাছেও একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে অভিভাবকদের অভিযোগের বিষয়ে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রুপম সেনগুপ্ত বলেন, ‘বোর্ড থেকে অনলাইনের এখনও কোন সফটওয়্যার না দেওয়াতে ফরমের মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে হচ্ছে। এতে কোন অনিয়ম হয়নি। টাকা গ্রহণ করে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীকে ভর্তি করার বিষয়ে তিনি বলেন-এ ধরনের অভিযোগ সত্য নয়’।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মনজুরুল হক বলেন, ‘মৌখিকভাবে এ ধরনের অভিযোগ পেয়ে তদন্ত করে কোন সত্যতা পাইনি। তারপরও সংক্ষুদ্ধ কোন অভিভাবক লিখিত আকারে অভিযোগ দায়ের করে, তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে’।