খালবিল গুলোর বেশীরভাগই দখল-দুষণের কারণে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি
মোঃ আবদুল জলিল রিপন
টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ভেসে গেছে অধিকাংশ মাছের ঘের। পানিতে তলিয়ে গেছে বেশিরভাগ সড়ক ও বাসাবাড়ির আঙিনা। পানিবন্দী হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে অসংখ্য মানুষ। পানি বেড়ে যাওয়ায় কৃষিখাতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। মরে গেছে বেশ কয়েকটি পোলট্রি ফার্মের বিপুল পরিমাণ মোরগ।
এছাড়া বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি উঠায় ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান। পানি উঠার কারণে বন্ধ রয়েছে উপজেলা পরিষদের নাগরিক সেবা এবং স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা সেবা।
খালবিল গুলোর বেশীরভাগই দখল-দুষণে পানি প্রবাহের ধীরগতির কারণেই এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।
অপরদিকে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে কাঁকড়ি নদীর পানি।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, চৌদ্দগ্রাম উপজেলা পরিষদ, নজমিয়া কামিল মাদ্রাসা, চৌদ্দগ্রাম মাধ্যমিক পাইলট বালিকা বিদ্যালয়,স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবনের নিচতলা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। জলাবদ্ধতার কারণে উপজেলা পরিষদে নাগরিক সেবা বন্ধ রয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নীচ তলায় পানি প্রবেশ করেছে। এতে জরুরি সেবাসহ সব চিকিৎসা সেবা ও হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের খাবার সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। সড়কগুলো ভেসে যাওয়ায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে।
মিজানুর রহমান চৌধুরী টিটু জানান, তার দুটি পোল্ট্রি ফার্মের কমপক্ষে ৫ হাজার মোরগ ছিল। বৃষ্টি পানি প্রবেশ করায় বেশীরভাগই মারা গেছে। এতে তার ৫০ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানান তিনি।
কেএম ফিশারিজের মালিক মো. খোরশেদ আলম বলেন, ‘আকস্মিক বন্যায় দুইটি দিঘি ও তিনটি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। এতে প্রায় অর্ধ কটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন তিনি।
গুণবতী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা কামাল বলেন, ‘বন্যায় গুণবতী ইউনিয়নের সব গ্রাম প্লাবিত হওয়ায় মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।’
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘আকস্মিক বন্যাতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পানি প্রবেশ করেছে। জরুরি ও বর্হি বিভাগে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ রয়েছে। এক্স-রে ও ইপিআই টিকা রুমেও পানি প্রবেশ করেছে। হাসপাতালের আবাসিক কোয়ার্টারগুলোতে পানি প্রবেশ করায় চিকিৎসক ঘরবন্দী হয়ে পড়েছে। এ কারণে হাসপাতালে ভর্তি করা সব রোগীকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ বলেন, ‘টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। উপজেলা পরিষদ এলাকায় পানি প্রবেশ করায় নাগরিক সেবা বন্ধ রয়েছে। এছাড়া কাঁকড়ি নদীর ঝুঁকিপূর্ণ বাদ গুলোতে দ্রুত বালির বস্তা দেওয়ার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলেছি।
আপনার মতামত লিখুন :